ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমার জ্ঞাতার্থে
গত ১ জুলাই থেকে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা বার্ষিক আয়কর রিটার্ন দাখিল চলছে। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৫ মাস রিটার্ন দেওয়া যাবে। প্রতিবছরই বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের রিটার্ন দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। এবারও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেমন ৩৮ ধরনের সেবা পেতে রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত কমানো, রিটার্ন জমায় জরিমানা শিথিল করা হয়েছে, আবার বকেয়া থাকলে পরিষেবা-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাবে ইত্যাদি। করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি।
করমুক্ত আয়সীমা আগের মতোই বার্ষিক তিন লাখ টাকা রাখা হয়েছে। যাঁদের করযোগ্য আয় তিন লাখ টাকার বেশি থাকবে, তাঁদের কর দিতেই হবে। নারী এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা। আর প্রতিবন্ধী করদাতাদের সাড়ে চার লাখ টাকা, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতাদের বার্ষিক আয়ের পৌনে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত কর নেই। প্রতিবন্ধী সন্তানের মা-বাবা বা আইনি অভিভাবকেরা তাঁদের আয়ে করমুক্তসীমায় আরও ৫০ হাজার টাকা ছাড় পাবেন। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের করমুক্ত আয়সীমা করা হয়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে ৩৮ ধরনের সেবা পেতে হলে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তা না হলে যে সব প্রতিষ্ঠান এই সেবা দেবে, তাদের ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। যেমন পাঁচ লাখ টাকার বেশি ব্যাংকঋণ পাওয়া, পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট ব্যবহার, অনলাইনে বেচাকেনার ব্যবসা, রাইড শেয়ারিংয়ে মোটরগাড়ি দেওয়া—এমনকি সন্তানকে ইংরেজি সংস্করণে (ইংলিশ ভার্সন) পড়াশোনা করালেও রিটার্ন জমা দিতে হবে। তাই ভবিষ্যতে এসব সেবা পেতে এবার রিটার্ন দিতেই হবে। এ ছাড়া গাড়ির মালিক, অভিজাত ক্লাবের সদস্য, কোম্পানির পরিচালক, বণিক সংগঠনের সদস্য, পৌর থেকে জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত প্রার্থী হলেও রিটার্ন দিতে হবে।
তাছাড়া এবার কর রেয়াত পাওয়ার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সুবিধা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, বার্ষিক আয়ের ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবেন। আর ধনী-গরিব সবাই ১৫ শতাংশ কর রেয়াত পাবেন।
যারা কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নিয়েছেন। কিন্তু প্রতিবছর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক হলেও কোনোবারই রিটার্ন দেননি। এবার এমন টিআইএনধারীর জন্য বিরাট সুযোগ এসেছে। যাঁরা অতীতে টিআইএন নিয়ে রিটার্ন দেননি, তাঁরা এবার রিটার্ন দিলে কোনো জরিমানা গুনতে হবে না। সবাইকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট. মোঃ শরীফুল ইসলাম শিপলু
01864500098